মাত্র তিন দিনে গলায় লিচুর বিচি আটকে পাঁচটি নিষ্পাপ শিশুমৃত্যু—ঘটনাগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, কতটা বিপজ্জনক হতে পারে আমাদের অসতর্কতা।
ফলের ভেতরে লুকানো মরণফাঁদ
বাংলাদেশে মে মাস থেকে শুরু হয় মধুমাস। বাজার ভরে ওঠে রসালো ফল—লিচু, জাম, আম, কাঁঠাল। কিন্তু সুস্বাদু এই ফলগুলোর ভেতরেই লুকিয়ে থাকে শ্বাসরোধের ভয়াবহ সম্ভাবনা। গত ৪–৬ মে (২০২৫) মাত্র তিন দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লিচুর বিচি গলায় আটকে প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ শিশু। মূলত খাবার ভালোভাবে না চিবিয়ে খাওয়া, খাওয়ার সময় শিশুদের অনিয়ন্ত্রিত আচরণ (দৌড়ানো, কথা বলা), এবং বড়দের অসচেতনতা থেকেই এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
শ্বাসরোধ: সময়ই জীবন
চিকিৎসকদের মতে, গলায় কিছু আটকে গেলে প্রথম ৭ থেকে ১২ মিনিটের ভেতরে ব্যবস্থা না নিলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে তাৎক্ষণিক মৃত্যুর ঝুঁকি তো থাকেই, পাশাপাশি ঘটে দীর্ঘস্থায়ী স্নায়বিক ক্ষতি।
লক্ষণগুলো কী?
- হঠাৎ কাশি বা ঘন ঘন কাশির চেষ্টা
- নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট
- কথা বলতে না পারা বা গলার স্বর চলে যাওয়া
- ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়া
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
তাৎক্ষণিক করণীয়
Heimlich কৌশল:
শিশুর পেছন থেকে জড়িয়ে পেটের ওপর চাপ দিন
অথবা
ছোট শিশুকে উপুড় করে পিঠে চাপড় দিন
পানি খাওয়ানো বা গলায় হাত ঢোকাবেন না
দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন বা নিকটবর্তী হাসপাতালে নিন
প্রতিরোধে যা করবেন
✔️ শিশুকে নিজের তত্ত্বাবধানে খাওয়ান
✔️ ছোট ছোট গ্রাসে খাওয়াতে উৎসাহ দিন
✔️ ফলের বিচি বা শক্ত বস্তু শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন
✔️ এক বছরের নিচের শিশুদের কখনো শক্ত দানা বা লজেন্স দেবেন না
✔️ ৫ বছরের নিচে শিশুদের বিচিযুক্ত ফল, বাদাম, পিন, মার্বেল, বোতাম ইত্যাদি থেকে দূরে রাখুন
বিশেষ বার্তা: সচেতনতা মানেই জীবন
প্রতিটি স্কুল, রেস্টুরেন্ট, ক্লাব ও পরিবারের প্রাপ্তবয়স্কদের choking প্রতিরোধে প্রশিক্ষিত হওয়া উচিত। যদি Heimlich কৌশল জানা থাকে, তাৎক্ষণিকভাবে আপনি একজন শিশুর জীবন